বাঙ্গালী বনাম হিন্দু

নিজের ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর আইডেনটিটিকে শক্তিশালী করে অপেক্ষাকৃত বৃহত্তর আইডেনটিটি গুলোর সাথে সমন্বয় রেখে মানবতা তথা সমগ্র সৃষ্টির সেবায় নিয়োজিত থাকাই আমাদের আদর্শ। আমাদের ছোট থেকে বড়- সব আইডেনটিটি গুলোর মধ্যে সম্পর্কের যে কল্পনা, তা কখনোই ‘কম্পার্টমেন্টাল রিলেশনশিপ’ নয়, যেখানে প্রতিটি আইডেনটিটি আলাদা আলাদা কক্ষে আবদ্ধ, একের সাথে অপরের কোনও সম্পর্ক নেই, বরং অনেক ক্ষেত্রেই পারস্পরিক সংঘাতে পরিপূর্ণ। আমাদের কল্পনায় এই সম্পর্ক হল একটা ‘ইনফাইনাইট স্পাইরাল’-এর মত, যেখানে প্রতিটি আইডেনটিটি অবিচ্ছিন্ন। ব্যক্তি থেকে শুরু করে পরিবারের একজন সদস্য, সমাজের একজন সদস্য হয়ে একজন বিশ্বমানব এবং সবশেষে এই সৃষ্টির অন্যতম একটি উপাদান- আমার এই অসংখ্য আইডেনটিটির মধ্যে কোনও পারস্পরিক সংঘাত নেই, বরং সর্বত্র একটা সমন্বয়ের কল্পনাই আমাদের বৈশিষ্ট্য। তাই আমি বাঙ্গালী হয়েও ভারতীয় এবং হিন্দু হতে পারি অতি সহজেই। হিন্দু হতে হলে আমাকে আমার বাঙ্গালী আইডেনটিটি ছাড়তে হয় না।

এখন প্রশ্ন আসবে, তাহলে মুসলমানদের সাথে এই সমন্বয় কেন হতে পারে না? এর কারণ তারা যে জীবনাদর্শে বিশ্বাসী, তাতে এই সমন্বয়ের অনুমতি শুধুমাত্র তাদের নিজেদের মতাবলম্বীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাদের মতবাদ অনুযায়ী বাদবাকিরা হয় কাফের, নয় মুশরিক, নয় মুনাফেক, নয় মুর্তাদ। আর এদের সাথে সমন্বয় নয়, প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং শত্রুতাই একজন মুসলমানের কর্তব্য। অমুসলমানদের হয় ধর্মান্তরিত করতে হবে, না হয় হত্যা করতে হবে, না হয় তাড়িয়ে দিতে হবে, না হয় দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বানিয়ে রাখতে হবে। এই শত্রুতামূলক জীবনদর্শনে বিশ্বাসীদের সাথে সমন্বয়ের চেষ্টা করা মানে নিজের বিনাশকে আহ্বান করা।

One thought on “বাঙ্গালী বনাম হিন্দু”

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s

%d bloggers like this: